নর্থইষ্ট প্রতিবেদক:যুক্তরাজ্য সরকার আশ্রয়প্রার্থী ও শরণার্থীদের জন্য বড় ধরনের নীতি পরিবর্তনের ঘোষণা দিয়েছে। বিদ্যমান সুরক্ষা কমিয়ে আনার মাধ্যমে অনিয়মিত অভিবাসন নিয়ন্ত্রণ এবং ডানপন্থি রাজনীতির উত্থান মোকাবিলাই এ পদক্ষেপের মূল উদ্দেশ্য বলে জানিয়েছে যুক্তরাজ্য সরকার।
রোববার (১৬ নভেম্বর) আল জাজিরার এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ডেনমার্কের কঠোর আশ্রয়নীতির আদলে তৈরি এ পরিকল্পনা শনিবার (১৫ নভেম্বর) রাতে প্রকাশ করেন যুক্তরাজ্যের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী শাবানা মাহমুদ। প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমারের নেতৃত্বাধীন সরকার বর্তমানে অভিবাসনবিরোধী দল রিফর্ম ইউকের জনপ্রিয়তা বৃদ্ধির চাপের মুখে রয়েছে।
মাহমুদ জানান, যুক্তরাজ্যের আশ্রয়প্রার্থীদের জন্য বিদ্যমান ‘গোল্ডেন টিকিট’ ব্যবস্থা শেষ করা হবে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় একে আধুনিক সময়ের সবচেয়ে বড় আশ্রয়নীতির সংস্কার হিসেবে উল্লেখ করেছে। আগামী সোমবার সংসদে এ প্রস্তাব উপস্থাপন করা হবে।
তবে রিফিউজি কাউন্সিলের প্রধান এনভার সলোমন এ পরিকল্পনা পুনর্বিবেচনার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, কঠোর নীতি মানুষকে যুক্তরাজ্যে আসা থেকে বিরত করতে পারবে না। যারা কঠোর পরিশ্রম করে ব্রিটেনের জন্য অবদান রাখেন, তাদের নিরাপদ ও স্থায়ী জীবন গড়ার সুযোগ থাকা উচিত।
বর্তমানে শরণার্থীরা পাঁচ বছরের জন্য অনুমোদন পান। এরপর তারা স্থায়ীভাবে দেশে থাকার অনুমতি ও নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করতে পারেন। নতুন নীতিতে এই অনুমতি কমিয়ে ৩০ মাস করার কথা বলা হয়েছে। নিয়মিত পুনর্মূল্যায়নের মাধ্যমে পরিস্থিতি নিরাপদ হলে তাদের নিজ দেশে ফিরে যেতে বাধ্য করা হবে। এ ছাড়া দীর্ঘমেয়াদি আবাসনের আবেদন করতে শরণার্থীদের ২০ বছর অপেক্ষা করতে হবে।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, ব্রিটেনে আশ্রয় আবেদনের সংখ্যা রেকর্ড ছাড়িয়েছে। ২০২৫ সালের মার্চ পর্যন্ত এক বছরে এক লাখ ৯ হাজার ৩৪৩ জন আশ্রয়ের আবেদন করেছে, যা গত বছরের তুলনায় ১৭ শতাংশ বেশি।
সরকার জানিয়েছে, নতুন সংস্কার অনিয়মিত অভিবাসনের আকর্ষণ কমাবে এবং দেশে অবস্থানরতদের সরানো সহজ হবে। একই সঙ্গে ২০০৫ সালের আইনে থাকা আশ্রয়প্রার্থীদের আবাসন ও সাপ্তাহিক আর্থিক সহায়তা প্রদানের বাধ্যবাধকতা বাতিল করার পরিকল্পনা রয়েছে। ফলে সহায়তা দেওয়া হবে বিবেচনার ভিত্তিতে, অর্থাৎ যারা কাজ করতে সক্ষম বা নিজেদের খরচ বহন করতে পারেন তারা সহায়তা নাও পেতে পারেন।
Leave a Reply