1. admin@ajkallondon.com : Ajkal London : Ajkal London
  2. ajkallondon@gmail.com : Dev : Dev
প্রবাসী আয়ে পড়েছে টান - Ajkal London
মঙ্গলবার, ০৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৬:১১ পূর্বাহ্ন

প্রবাসী আয়ে পড়েছে টান

রিপোর্টার নাম
  • প্রকাশিত : সোমবার, ২ আগস্ট, ২০২১
  • ১৮৭ বার ভিউ

নজরুল ইসলাম.ঢাকা : হঠাৎ প্রবাসী আয় বা রেমিট্যান্স কমেছে। জুলাইয়ে দেশে ১৮৭ কোটি ১৪ লাখ ডলার রেমিট্যান্স এসেছে। যা তার আগের মাস জুনের চেয়ে ৬ কোটি ৯৩ লাখ ডলার কম। এছাড়া আগের বছরের একই সময়ের চেয়ে প্রায় ২৮ শতাংশ কম। সোমবার (২ আগস্ট) বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রকাশিত প্রতিবেদনের তথ্য বলছে, সদ্য সমাপ্ত জুলাই মাসে প্রবাসী বাংলাদেশিরা ১৮৭ কোটি ১৪ লাখ ৯০ হাজার মার্কিন ডলার (১.৮৭ বিলিয়ন) রেমিট্যান্স দেশে পাঠিয়েছেন। বাংলাদেশি মুদ্রায় (প্রতি ডলার ৮৫ টাকা ধ‌রে) যার পরিমাণ ১৫ হাজার ৯০৭ কোটি টাকা। যা আগের বছরের একই মাসের চেয়ে প্রায় ২৭ দশমিক ৯৭ শতাংশ কম। গত বছরের জুলাইয়ে রেমিট্যান্স এসেছিল ২৫৯ কোটি ৮২ লাখ ডলার।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর সালেহ উদ্দিন আহমেদ  বলেন, করোনা মহামারি পরিস্থিতির মধ্যেও কয়েকটি কারণে রেমিট্যান্স বেড়েছে। এর মধ্যে অন্যতম মহামারিতে অনেক প্রবাসী কাজ হারায়, আবার অনেকে কাজ হারানোর শঙ্কায় পড়ে। এমন পরিস্থিতিতে প্রবাসীদের সঞ্চিত অর্থ যাই ছিল তা দেশে পাঠিয়েছে। আবার দেশে টানা লকডাউন ও বিধিনিষেধের কারণে প্রবাসীদের অনেক পরিবার আত্মীয়-স্বজন আর্থিক সংকটে পড়ে। তাদের জন্যও টাকা পাঠায়। এছাড়া সরকারের পক্ষ থেকে দুই শতাংশ নগদ প্রণোদনা দেওয়ায় বৈধ চ্যানেলে দেশে বেশি রেমিট্যান্স পাঠাচ্ছে। এসব কারণে রেমিট্যান্স প্রবাহ বেড়েছিল।

তবে এখন করোনার তৃতীয় ধাক্কা চলছে। অনেক দেশ লকডাউন দিয়েছে। ফলে প্রবাসী শ্রমিকদের আয় কম। এছাড়া জমানো অর্থ যা ছিল তাও ফুরিয়ে গেছে। তাই রেমিট্যান্স পাঠানো কিছুটা কমেছে। তবে আরও কয়েক মাস পরিস্থিতি দেখে বোঝা যাবে সামনের অবস্থা। কারণ এক মাসে রেমিট্যান্স কিছুটা কমলেও যদি প্রবাসীদের কাজ ঠিক থাকে তাহলে আগামীতে বাড়বে বলে মনে করেন সাবেক গভর্নর।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, জুলাই মাসে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে রেমিট্যান্স আহরিত হয়েছে ৪৩ কোটি ১৮ লাখ ডলার। বিশেষায়িত দুটি ব্যাংকের মাধ্যমে ৩ কোটি ২২ লাখ ডলার রেমিট্যান্স এসেছে। এছাড়া বেসরকারি ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে ১৪০ কোটি ১২ লাখ ডলার এবং বিদেশি ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে ৬১ লাখ ডলার রেমিট্যান্স এসেছে।

বরাবরের মতো বেসরকারি ইসলামী ব্যাংকের মাধ্যমে সবচেয়ে বেশি রেমিট্যান্স আহরিত হয়েছে। ব্যাংকটির মাধ্যমে রেমিট্যান্স আহরিত হয়েছে ৫৫ কোটি মার্কিন ডলার। এছাড়া ডাচ-বাংলা ব্যাংকের মাধ্যমে এসেছে ২২ কোটি ৯১ লাখ ডলার রেমিট্যান্স। অগ্রণী ব্যাংকের মাধ্যমে ১৯ কোটি ৪৮ লাখ ডলার, সোনালী ব্যাংকের মাধ্যমে ১১ কোটি ৭৫ লাখ ডলার এবং জনতা ব্যাংকের মাধ্যমে ৫ কোটি ৯২ লাখ ডলার রেমিট্যান্স আহরিত হয়েছে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য বলছে, গত ২০২০-২১ অর্থবছরে দুই হাজার ৪৭৭ কোটি ৭৭ লাখ মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স দেশে আসে। যা আগের অর্থবছরের চেয়ে ৩৬ দশমিক ১০ শতাংশ বেশি। এর আগে কোনো অর্থবছরে এত পরিমাণ রেমিট্যান্স আসেনি বাংলাদেশে। ২০১৯-২০ অর্থবছরে এক হাজার ৮২০ কোটি ডলার রেমিট্যান্স পাঠিয়েছিলেন প্রবাসীরা। অর্থবছর হিসাবে যা বাংলাদেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স আহরণ। তারও আগে ২০১৮-১৯ অর্থবছরে দেশে রেমিট্যান্স আহরণের রেকর্ড হয়। ওই সময় এক হাজার ৬৪২ কোটি ডলার রেমিট্যান্স আসে দেশে।

২০১৯ সালের ১ জুলাই থেকে প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্সে ২ শতাংশ হারে প্রণোদনা দিচ্ছে সরকার। অর্থাৎ কোনো প্রবাসী ১০০ টাকা দেশে পাঠালে তার সঙ্গে আরও ২ টাকা যোগ করে মোট ১০২ টাকা পাচ্ছেন সুবিধাভোগী। এছাড়া ঈদ ও উৎসবে বিভিন্ন ব্যাংক ও মোবাইল ব্যাংকিংয়ের সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান সকারের প্রণোদনার সঙ্গে বাড়তি এক শতাংশ দেওয়ার অফার দিচ্ছে। এতে করে বৈধ চ্যানেলে রেমিট্যান্স পাঠাতে উৎসাহী হচ্ছেন প্রবাসীরা।

এদিকে রেমিট্যান্সে প্রবাহ বাড়াতে প্রবাসী আয়ে এক শতাংশ প্রণোদনা বাড়ানোর প্রস্তাব দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। বর্তমানে প্রবাসী আয়ে দুই শতাংশ প্রণোদনা দিচ্ছে সরকার। এটাকে তিন শতাংশ করতে সম্প্রতি বাংলাদেশ ব্যাংক এ সংক্রান্ত একটি চিঠি অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগে পাঠিয়েছে।

চিঠিতে বলা হয়, প্রবাসীদের হুন্ডির পথ থেকে নিরুৎসাহিত করতে বৈধ পথে রেমিট্যান্স ফি মওকুফ করা প্রয়োজন। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের ৩০০র বেশি এক্সচেঞ্জ হাউজ থেকে বাংলাদেশের বিভিন্ন ব্যাংকের রেমিট্যান্স আসে। একেক দেশের এক্সচেঞ্জ হাউজগুলো ভিন্ন ভিন্ন ফি চার্জ নিয়ে থাকে। এটি সমন্বয় করা কঠিন। তাই প্রতি মাসে সর্বোচ্চ ৫০০ মার্কিন ডলার কিংবা এর চেয়ে কম রেমিট্যান্স পাঠানো প্রবাসীদের প্রচলিত দুই শতাংশ প্রণোদনার পাশাপাশি অতিরিক্ত আরও এক শতাংশ প্রণোদনা দেওয়ার প্রস্তাব করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

Google News

নিউজ শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর