1. admin@ajkallondon.com : Ajkal London : Ajkal London
  2. ajkallondon@gmail.com : Dev : Dev
পরকীয়া প্রতিকারে ইসলাম কী বলে - Ajkal London
রবিবার, ১৩ অক্টোবর ২০২৪, ০৫:০৭ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় অব্যাহতি পেলেন তারেক রহমান পরিচালক হিসেবে আত্মপ্রকাশ করতে যাচ্ছেন কুসুম শিকদার বাংলাদেশে সংস্কার ও বন্যা পুনর্বাসনে সহায়তা করবে জাতিসংঘ ভারত বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক দৃঢ় করতে চায় : মির্জা ফখরুল লন্ডনে আতেক হত্যাকাণ্ড :৩০ বছরেও ধরা পড়েনি কোনো আসামী সার্ক জার্নালিস্ট ফোরাম বাংলাদেশ চ্যাপ্টার গঠিত রাজনৈতিক দল ও ছাত্র সমাজকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে : মুশফিকুল ফজল আনসারী ওসমানী বিমানবন্দরকে আন্তর্জাতিক মানে উন্নীতকরণ ও বিমান ভাড়া কমানোর দাবিতে সংবাদ সম্মেলন আন্দোলন অব্যাহত রাখবে বিএনপি – মির্জা ফখরুল মালয়েশিয়ায় বিশ্ব মুক্ত গণমাধ্যম দিবস পালন

পরকীয়া প্রতিকারে ইসলাম কী বলে

রিপোর্টার নাম
  • প্রকাশিত : শনিবার, ১ অক্টোবর, ২০২২
  • ১৬৩ বার ভিউ

সাদেকুর রহমান: পরকীয়া এক সামাজিক ব্যাধিতে পরিণত হয়েছে। পরকীয়ার বিষাক্ত ছোবলে শতশত সুখের সংসার তছনছ হয়ে যাচ্ছে। ফলে সন্তান হারাচ্ছে মা-বাবা, স্বামীহারা হচ্ছেন স্ত্রী, স্ত্রী হারাচ্ছেন স্বামী। আত্মীয়স্বজন, পাড়া-প্রতিবেশীর স্বপ্ন ভঙ্গ হচ্ছে। পরকীয়ার বিষবাষ্পে বিপর্যস্ত হচ্ছে পরিবার ও সমাজ। পরকীয়া থেকে মুক্তির উপায় খুঁজছে ব্যক্তি, সমাজ ও রাষ্ট্র।

ইসলাম একটি সার্বজনীন, যুগোপযোগী ও বাস্তবভিত্তিক ধর্ম। ইসলাম পরকীয়ার প্রতিকারে যেসব নীতিমালা এবং দিকনির্দেশনা প্রদান করেছে তা অত্যন্ত শক্তিশালী, বিজ্ঞানসম্মত ও বাস্তবধর্মী। ইসলাম পরকীয়ার প্রতিকারে নিুোক্ত পদক্ষেপগুলো গ্রহণ করেছে-

খোদাভীরুতা : ইসলাম প্রথম স্বামী-স্ত্রীকে খোদাভীরুতা, দুনিয়াবিমুখতা ও কৃতকর্মের জবাবদিহিতার ভয় অর্জনের প্রতি জোর তাকিদ করেছে। কারণ তারা এসব গুণে গুণান্বিত হলে দাম্পত্য জীবনে আল্লাহ বিধানকে লঙ্ঘন করবে না। পর নারী ও পর পুরুষে আসক্ত হবে না। আল্লাহ পাক বলেন, ‘হে মানব সকল! তোমরা তোমাদের পালনকর্তাকে ভয় কর, যিনি তোমাদের এক ব্যক্তি থেকে সৃষ্টি করেছেন এবং যিনি তার থেকে তার জীবনসঙ্গিণীকে সৃষ্টি করেছেন। আর বিস্তার করেছেন তাদের দুজন থেকে অগণিত পুরুষ ও নারী। (সূরা নিসা-১)।

নৈতিক শিক্ষা : ইসলাম স্বামী-স্ত্রীকে নৈতিক শিক্ষা অর্জনের প্রতি গুরুত্বারোপ করেছে। তাদের আত্মিক কলুষতামুক্ত হয়ে কষ্ট সহিষ্ণুতা, ধৈর্যশীলতা, অল্পে তুষ্টি ও কৃতজ্ঞতার মতো মহৎ গুণাবলি অর্জনের নির্দেশ দিয়েছে। কারণ মানুষের চাহিদা অসীম। সসীম জগতে তা মেটানো সম্ভব নয়। তাই দাম্পত্য জীবনে তারা যদি পরস্পর ধৈর্যশীল ও সহানুভূতিশীল হয়, সুখ-দুঃখ খুশি মনে মেনে নেয়, আল্লাহর দেওয়া আর্থিক, শারীরিক এবং মানসিক শক্তি-সামর্থ্যের ওপর তুষ্ট থাকে, তাহলে তারা কখনো পরকীয়ায় জড়াবে না। দাম্পত্য জীবনকে আল্লাহ প্রদত্ত শ্রেষ্ঠ উপহার হিসাবে মনে করবে।

পরস্পরে ভালোবাসা : পারস্পরিক ভালোবাসা বৃদ্ধি পায় এবং পরস্পরের আকর্ষণ হ্রাস না পায় এমন কিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করতে স্বামী-স্ত্রীকে ইসলাম আদেশ দিয়েছে। যেমন কখনো একই পাত্র থেকে আহার গ্রহণ করা। একে অপরের মুখে খাবার তুলে দেওয়া। স্বামীকে চিন্তিত দেখলে তাকে সান্ত্বনা দেওয়া ও সাহস জোগানো। আম্মাজান খাদিজা (রা.) রাসূল (সা.)-এর দুঃখের সময় তার পাশে ছিলেন। তাকে সাহস জুগিয়েছেন। কর্মস্থল থেকে ফিরে হাস্যোজ্জ্বল ও সালাম দিয়ে ঘরে প্রবেশ করা। স্ত্রীও মুচকি হাসি দিয়ে বরণ করা, কুশলাদি জিজ্ঞেস করা। অফিসে যাওয়ার সময় হলে দরজা পর্যন্ত এগিয়ে দেওয়া, মোবাইল, ব্যাগ ইত্যাদি হাতে তুলে দেওয়া। স্বামী স্ত্রীর কপালে কিংবা হাতে চুমু দেওয়া। বাসা-বাড়িকে সর্বদা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন ও পরিপাটি রাখা। নিজে সেজেগুজে থাকা। সাংসারিক কাজকর্মে স্ত্রীকে সাহায্য করা। হাজারো ব্যস্ততার মাঝেও স্বামী-স্ত্রী পরস্পরকে সময় দেওয়া। কিছু সময় একান্তে কাটানো। রোমান্টিক কথাবার্তা বলে ভালোবাসা প্রকাশ করা। মোটকথা পারস্পরিক সম্পর্ককে দৃঢ় ও মজবুত করা। নিজেদের মধ্যে শারীরিক কিংবা মানসিক কোনো ধরনের দূরত্ব সৃষ্টি হওয়ার সুযোগ না দেওয়া।

দৃষ্টি সংযত রাখা : পর নারী কিংবা পর পুরুষের প্রতি কুদৃষ্টি দেওয়া, তাদের সঙ্গে দেখা সাক্ষাৎ করা, কোমল ভাষায় কথা বলা, অবাধে মেলামেশা ইত্যাদি থেকে কঠোরভাবে নিষেধ করেছে ইসলাম। আল্লাহ পাক বলেন : হে নবি! মুমিনদের বলুন, তারা যেন তাদের দৃষ্টি নত রাখে এবং তাদের যৌনাঙ্গের হেফাজত করে। ইহাই তাদের জন্য উত্তম। ইমানদার নারীদের বলুন, তারা যেন তাদের দৃষ্টিকে নত রাখে এবং তাদের লজ্জাস্থানের হেফাজত করে। (সূরা নূর ৩০-৩১)।

অবাধে মেলামেশা না করা : কর্মস্থলে নিজ দায়িত্ব পালনের প্রতি মনোযোগী থাকবে। একান্ত প্রয়োজন ছাড়া পর পুরুষের সঙ্গে কথা বলবে না। একাকিত্বে খোশ গল্পে মেতে উঠবে না। প্রয়োজনে স্বাভাবিকভাবে কথা বলবে। আকর্ষণীয়, কোমল ও নম্র কণ্ঠে নয়। আল্লাহতায়ালা বলেন : যদি তোমরা আল্লাহকে ভয় করো, তবে পর পুরুষের সঙ্গে কোমল ও আকর্ষণীয় ভঙ্গিতে কথা বলো না, ফলে যার অন্তরে ব্যাধি আছে সে কুবাসনা করে। তোমরা সঙ্গত কথা বল। (সূরা আহযাব ৩২)।

অবৈধ যৌনাচারে লিপ্ত না হওয়া : মহানবি (সা.) বলেন, ‘হে লোক সকল তোমরা অবৈধ যৌন মিলনকে ভয় কর। কেননা তার ছয়টি অশুভ পরিণাম রয়েছে। তিনটি দুনিয়ায় আর তিনটি পরকালে। দুনিয়ার তিনটি পরিণাম হলো- শ্রীহীনতা, দরিদ্র ও আয়ুষ্কাল হ্রাস। পরকালের তিনটি পরিণাম হলো-আল্লাহর ক্রোধ, মন্দ হিসাব, দোজখের শাস্তি’ (শুয়াবুল ইমান, বায়হাকী)। যে অপরকে পরকীয়ার জন্য ফুসলায় তার ব্যাপারে হাদিসে কঠোর সতর্কবাণী এসেছে। রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেন, যে অন্যের স্ত্রীকে অথবা ক্রীতদাসকে ফুসলিয়ে তার বিরুদ্ধে উসেক দেবে সে আমার দলভুক্ত নয়। (সুনানে আবু দাউদ)।

আমাদের সমাজ থেকে পরকীয়া দূর করতে হলে সম্মিলিত প্রচেষ্টা চালাতে হবে। এ ক্ষেত্রে ইসলামের দিকনির্দেশনাগুলো ফলো করতে হবে। বিশেষত দেশের প্রতিটি নাগরিককে নৈতিক শিক্ষা দিতে হবে। তাদের মধ্যে খোদাভীরুতা, দুনিয়া বিমুখিত ও জবাবদিহিতার ভয় সৃষ্টি করতে হবে। সর্বোপরি পরকীয়া সম্পর্ককারীদের কঠোর আইনের আওতায় আনতে হবে। আল্লাহতায়ালা সবাইকে তৌফিক দান করুন। আমীন।

লেখক : মুফতি ও মুহাদ্দিস, শেখ জনুরুদ্দীন (র.) দারুল কুরআন মাদ্রাসা

Google News

নিউজ শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর