নজরুল ইসলাম,ঢাকা থেকে: বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদের সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সেক্রেটারি ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ বলেন, যারা শারীরিক অক্ষমতা ও পঙ্গুত্বকে ঝেড়ে ফেলে অদম্য মেধার অধিকারী হিসেবে নিজেকে উপস্থাপন করেছে তারা এ জাতির সম্পদ। এ সময় শারীরিকভাবে অক্ষম অদম্য মেধাবী শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, আপনারা শুধু শারীরিক অক্ষম। কিন্তু মহান আল্লাহ আপনাদেরকে মেধাবী করেছে। ভিন্নদিক থেকে বাড়িয়ে দিয়েছেন, এগিয়ে দিয়েছেন।
তিনি বলেন, বিগত ১৭ বছর আওয়ামী লীগ বাংলাদেশের প্রতিটি নাগরিকে পুঙ্গ করে রেখেছিল। দেশের অর্থনীতি, পররাষ্ট্র নীতি, রাজনীতি ধ্বংস করে দিয়েছে। রাষ্ট্রের সকল সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান ধ্বংসের মাধ্যমে জাতিকে পুঙ্গ করে দেওয়া হয়েছে। বৃহস্পতিবার (৬ ফেব্রুয়ারি) বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের ৪৮তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলায় শারীরিক প্রতিবন্ধী অদম্য মেধাবী শিক্ষার্থীদের সংবর্ধনা প্রদান অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন তিনি।ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ বলেন, হুইল চেয়ারে বসে, স্ক্র্যাচে ভর করে যারা নতুন বাংলাদেশ গড়তে আন্দোলনে শামিল হয়েছে তারা এ জাতির পথপ্রদর্শক। তাদেরকে দেখেই মানুষের প্রেরণা বৃদ্ধি পেয়েছে। শারীরিক অক্ষমদের রাষ্ট্র কর্তৃক আর অক্ষম করে রাখা হবে না, ইসলামী ছাত্রশিবিরের নেতৃত্বে শারীরিক অক্ষমতা এড়িয়ে সংসদসহ রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব পালনে অংশগ্রহণ করবে এদেশের সকল শ্রেণি পেশার নাগরিক।
তিনি আরও বলেন, প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের জন্য প্রয়োজনীয় সুযোগ সুবিধা রাষ্ট্র কর্তৃক নিশ্চিত করা মৌলিক অধিকারের অংশ। কিন্তু শিক্ষার্থীরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মত প্রতিষ্ঠানে প্রতিবন্ধী সুবিধা সম্মিলিত টয়লেট ব্যবহারের সুযোগ থেকে বঞ্চিত এটা জাতির জন্য লজ্জার। ইসলামী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা হলে প্রতিটি নাগরিকের মৌলিক অধিকার রাষ্ট্র কর্তৃক নিশ্চিত করা হবে। অধিকার আদায়ের জন্য আন্দোলন করতে হবে না। তাই নতুন বাংলাদেশে ইসলামী সমাজ বিনির্মাণে সকল নাগরিকদের ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানাই।
ছাত্র শিবিরের সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি বলেন, ইসলামী ছাত্রশিবির মেধা, দক্ষতা ও যোগ্যতার অনন্য নিদর্শন। ইসলামী ছাত্রশিবির ১৯৭৭ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি মাত্র ছয়জন সদস্য নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদ থেকে গঠিত হয়। প্রতিষ্ঠার পর থেকে জ্ঞানবিজ্ঞান, মেধা-মননে, শান্তি প্রতিষ্ঠায় ইসলামী ছাত্রশিবিরের ভূমিকা ও নেতৃত্ব এদেশের মানুষের হৃদয় দখল করেছে। সেজন্যই অগণিত সাথী-সদস্য নিয়ে শিবিরের আজ পথচলা।
জামায়াতের এ নেতা বলেন, ইসলামী ছাত্রশিবির শারীরিক প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের অদম্য মেধাবী সংবর্ধনার আয়োজন করেছে এটি তাদের নিজস্ব কোনো কৃতিত্ব নয়। এটি আল্লাহর বিধান ইসলামের নিদর্শন। ইসলামই যোগ্যদের সম্মানিত করার নিদের্শ দিয়েছে। ইসলামী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা হলে প্রত্যেক নাগরিক নিজ নিজ যোগ্যতা ও দক্ষতার আলোকে সম্মানের অধিকারী হবে।
সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের উন্নয়নে কাজ করা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ইবনু আহমেদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থী কামরুন নাহার রিতু ও পুষ্পিতা চৌধুরী, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজনীতি বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী নাজিম হোসেন, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ইমরান হোসেন নিজেদের অনুভূতি প্রকাশ করে বক্তব্য রাখেন। এ সময় তারা বিশ্ববিদ্যালয়ে তাদের নানামুখী সমস্যা তুলে ধরে ইসলামী ছাত্রশিবিরের নেতৃত্বে সকল সমস্যা সমাধানের উদ্যোগ গ্রহণের আহ্বান জানান।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন মানারাত ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. মোহাম্মদ আব্দুর রব, ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি জাহিদুল ইসলাম, ন্যাশনাল ডক্টরস ফোরামের সভাপতি ডা. নজরুল ইসলাম, ইসলামী ছাত্রশিবিরের সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি জাহিদুর রহমান, ইসলামী ছাত্রশিবিরের সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি প্রকৌশলী সিরাজুল ইসলাম প্রমুখ।
Leave a Reply