কমিউনিটি প্রতিবেদক: বিসিএ (বাংলাদেশ ক্যাটারার্স এসোসিয়েশন) এবং ইউকেবিসিসিআই (ইউকে বাংলাদেশ ক্যাটালিস্ট অব কমার্স এন্ড ইন্ডাষ্ট্রি) এর যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশে বিনিয়োগকারী ৭ প্রবাসী ব্যবসায়িকে গ্রেফতারের তীব্র প্রতিবাদ জানানো হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২৯ সেপ্টেম্বর) লন্ডন বাংলা প্রেস ক্লাবে অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনে উভয় সংগঠনের নেতৃবৃন্দ প্রবাসী বাংলাদেশীরা দেশে যে সকল হয়রানী হন ও হচ্ছেন, তা সম্মিলিতভাবে বাংলাদেশ সরকারকে অবহিত করে হয়রানী বন্ধের জোর দাবি জানান।
সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন ও বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন ইউকে—বিসিসিআই’র চেয়ারম্যান ইকবাল আহমদ ওবিই, প্রেসিডেন্ট এমজি মৌলা মিয়া, ফাউন্ডার প্রেসিডেন্ট বজলুর রশীদ এমবিই, বিসিএ প্রেসিডেন্ট এম এ মুনিম ওবিই। লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন বিসিএ’র প্রেস এন্ড পাবলিকেশন্স সেক্রেটারি ফরহাদ হোসেন টিপু।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, গত ২১শে সেপ্টেম্বর বাংলাদেশের ‘হোমল্যান্ড লাইফ ইন্সু্যরেন্স কোম্পানি লিমিটেড’র বার্ষিক সাধারণ সভায় অংশ নিতে লন্ডন থেকে ঢাকায় গিয়েছিলেন কোম্পানিটির ৭ পরিচালক। কিন্তু কোম্পানিটির মতিঝিলের প্রধান কার্যালয় থেকে তাদের গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠানো হয়। কিন্তু রহস্যজনক কারণে একই মামলার আসামি হলেও গ্রেপ্তার করা হয়নি কোম্পানিটির চেয়ারম্যান, ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও মহাব্যবস্থাপকসহ অন্য কোনো পদস্থ কর্মকর্তাকে।
লিখিত বক্তব্যে নেতৃবৃন্দ হলফ করে বলেন, “যুক্তরাজ্য প্রবাসী এই ৭ ব্যবসায়ী দেশে ফেরায় ক্ষুব্ধ হয়ে গোপনে পুলিশকে খবর দিয়ে তাদের ধরিয়ে দেওয়া হয়েছে। গ্রেপ্তারকৃতরা সবাই যুক্তরাজ্যের নাগরিক ও প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী। গ্রেপ্তারকৃত সাত ব্যবসায়ী হলেন— সিলেটের ওসমানীনগর উপজেলার বাসিন্দা জামাল মিয়া ও তার ভাই কামাল মিয়া, বিশ্বনাথের আবদুল আহাদ ও তার ভাই আবদুল হাই, ছাতকের জামাল উদ্দিন ও শাহজালাল উপশহরের আবদুর রাজ্জাক। তাদের মধ্যে জামাল মিয়া কোম্পানির ভাইস চেয়ারম্যান ও বাকি সবাই পরিচালক।
উল্লেখ্য গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে জামাল উদ্দিন মকদ্দুস বাংলাদেশ ক্যাটারার্স এসোসিয়েশনের সম্মানিত সিনিয়র সহ—সভাপতি। ভদ্র, অমায়িক এবং দেশ প্রেমি সমাজকর্মী জামাল উদ্দিন মকদ্দুস নিজ এলাকা ছাতক থানায় নিজ গ্রামে জামাল উদ্দিন উচ্চবিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেছেন।
সংবাদ সম্মেলনে ব্রিটিশ বাংলাদেশী ব্যবসায়িদের শীর্ষস্থানীয় এই দুই সংগঠনের পক্ষ থেকে ৫টি দাবি জানানো হয়েছে। এগুলো হচ্ছেঃ (১) প্রবাসী ৭ ব্যবসায়ীর নিঃশর্ত মুক্তি দিতে হবে, (২) রহস্যজনক এই গ্রেফতারের সুষ্ঠু তদন্ত করতে হবে, (৩) আমরা প্রবাসী ব্যবসায়ী যারা বাংলাদেশে ইনভেস্টমেন্ট করাকে প্রমোট করে থাকি, তাদের নিরাপত্তা ও সামাজিক মর্যাদা নিশ্চিত করতে হবে, (৪) অযথা মামলা ও হয়রানী করা থেকে বিরত থাকতে হবে, এবং (৫) বাংলাদেশে আলাদা ভাবে প্রবাসীদের মামলাগুলো ত্বরিত বিচারের জন্য দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল স্থাপন করতে হবে।
সংবাদ সম্মেলনে নেতৃবৃন্দ বলেন, আমাদের সংগঠনের পক্ষ থেকে ইতোমধ্যে লন্ডনস্থ বাংলাদেশ হাইকমিশন এবং বাংলাদেশস্থ ব্রিটিশ হাইকমিশনকে যুক্তরাজ্য প্রবাসী ৭ ব্যবসায়ীকে গ্রেপ্তারের ব্যাপারে আমাদের উদ্বেগের আমরা কথা জানিয়েছি। প্রবাসী ৭ ব্যবসায়ীকে গ্রেপ্তারের ফলে বাংলাদেশে ব্যবসার পরিবেশ আছে বলে যে সুনাম ছিলো, তা আজ কতিপয় দুষ্ট মানুষের জন্য নষ্ট হতে চলেছে। আমরা আশা করি উক্ত ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত হবে। এবং আমরা প্রবাসী ব্যবসায়ীরা দেশের অর্থনীতিতে অবদান রাখতে পারবো।”
Leave a Reply