কমিউনিটি প্রতিবেদক: যুক্তরাজ্যে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার সাঈদা মুনা তাসনিম বলেছেন, “জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীন মাতৃভূমিতে পা রাখার আগে, ১৯৭২ সালের জানুয়ারিতে যুক্তরাজ্যে ঐতিহাসিক সফর এবং তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী এডওয়ার্ড হিথের সঙ্গে তাঁর বৈঠক করার মাধ্যমে একটি নতুন বন্ধুত্ব গড়ে তুলেছিলেন এবং তা একটি স্বাধীন জাতি হিসেবে বাংলাদেশের স্বীকৃতি লাভ কে ত্বরান্বিত করেছিল। আর গত পঞ্চাশ বছরে এই দুই দেশের মধ্যকার পারস্পরিক সম্পর্ক সুদৃঢ় করতে বড় ভূমিকা পালন করছেন ব্রিটিশ বাংলাদেশিরা।”
মহান স্বাধীনতা দিবস উদযাপন উপলক্ষে লন্ডন বাংলা প্রেস ক্লাব আয়োজিত আলোচনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপরের কথাগুলো বলেছেন হাইকমিশনার সাঈদা মুনা তাসনিম।
‘বাংলাদেশ ব্রিটেন কূটনৈতিক সম্পর্কের ৫০ বছর’ শীর্ষক এ আলোচনায় প্রধান বক্তা ছিলেন বাংলাদেশে নিযুক্ত সাবেক ব্রিটিশ হাইকমিশনার আনোয়ার চৌধুরী। লিখিত বক্তব্যে বাংলাদেশের সাম্প্রতিক অগ্রগতির প্রশংসা করে তিনি বলেন, বিশ্বের অন্যতম ‘দরিদ্র দেশ’ থেকে ‘বিশ্বের অন্যতম দ্রুত বিকাশমান অর্থনীতির দেশ’ হিসেবে বাংলাদেশের রূপান্তর ঘটেছে। বাংলাদেশের অগ্রযাত্রায় ঘনিষ্ঠ সহযোগী হিসেবে যুক্তরাজ্যের অংশীদারিত্বের কথাও উল্লেখ করেন তিনি। যুক্তরাজ্য এবং বাংলাদেশের মধ্যে একটি অনন্য এবং দীর্ঘস্থায়ী সম্পর্কের ভিত্তি স্থাপনে ব্রিটিশ বাংলাদেশিরা ভূমিকা রেখেছেন উল্লেখ করে আনোয়ার চৌধুরী ন্যাশনাল হেলথ সার্ভিস, শিক্ষা, উন্নয়ন, প্রতিরক্ষা, সংস্কৃতি, ও রন্ধনশিল্পে বাংলাদেশিদের সৃজনশীল অবদানের প্রশংসা করেন।
‘বাংলাদেশ ও ব্রিটেনের কূটনৈতিক সম্পর্কের ৫০ বৎসরের সুবর্ণ মৈত্রী’ আলোচনায় বিশেষ অতিথি হিসেবে অংশগ্রহণ করেন বাংলাদেশ থেকে আসা দৈনিক ইত্তেফাকের সাবেক নির্বাহী সম্পাদক তোশারফ আলী।
গত ৩০ মার্চ বুধবার পূর্ব লন্ডনের লন্ডন এন্টারপ্রাইজ একাডেমিতে এই অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ক্লাব প্রেসিডেন্ট এমদাদুল হক চৌধুরী। এসিস্ট্যান্ট জেনারেল সেক্রেটারি সাঈম চৌধুরীর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানের শুরুতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন ক্লাবের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট তারেক চৌধুরী। সেমিনারের শুরুতে ক্লাব প্রেসিডেন্ট এমদাদুল হক চৌধুরী একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের শ্রদ্ধা সাথে স্মরণ করেন এবং তিনি মনে করেন বাংলাদেশে ও ব্রিটেনের যে সম্পর্ক তৈরি হয়েছে তার অবদান বাংলাদেশী কমিউনিটির।
হাইকমিশনার সাইদা মুনা তাসনিম ‘বাংলাদেশ ও ব্রিটেনের কূটনৈতিক সম্পর্কের ৫০ বৎসরে কমিউনিটির অবদানের কথা’ উল্লেখ করে বলেন, দেশের উন্নয়নে প্রবাসীরা বাংলাদেশে বিনিয়োগের পরিমাণ আরও বাড়াবেন। এখন দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা এগিয়ে যাচ্ছে।
‘খুব শীঘ্রই বাংলাদেশ ও যুক্তরাজ্যের মধ্যে হোম অফিস ডায়ালগ নামে একটি নতুন কর্মসূচী হাতে নেয়ার’ কথা তিনি তার বক্তব্যে উল্লেখ করেন।
বাংলাদেশের গার্মেন্টস ইন্ডাস্ট্রি বহির্বিশ্বে ছড়িয়ে দেয়া, যুক্তরাজ্যে পড়তে আসা শিক্ষার্থীদের শিক্ষাগত যোগ্যতা সঠিকভাবে মূল্যায়ন, বার্মিংহামে ২৮ শে মার্চ ১৯৭১ সালে দেশের জাতীয় পতাকা উত্তোলন দিবসকে রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি প্রদানের আহ্বান জানিয়ে অতিথিদের প্রশ্ন করেন চ্যানেল এস সিনিয়র নিউজ প্রেজেন্টার জাকি রেজওয়ানা আনোয়ার, উদয় শংকর দাস, সৈয়দ এনাম, শামসুল আলম লিটন ও সাইদুর রহমান সোহেল।
অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় পর্বে ছিল মুক্তিযুদ্ধের গান। এতে অংশগ্রহণ করেন একাত্তরের রণাঙ্গনের কণ্ঠযোদ্ধা হিমাংশু গোস্বামী, ডা. রুখসানা সাফা ও গৌরী চৌধুরী। তৃতীয় পর্বে ছিল মুক্তিযুদ্ধের সময়ে প্রবাসীদের ভূমিকা নিয়ে একটি বিশেষ প্রামাণ্যচিত্র। এটি পরিচালনা ও সম্পাদনা করেন কবি দিলু নাসের।
Leave a Reply