কমিউনিটি প্রতিবেদক: ইউকে-বাংলা রিপোর্টার্স ইউনিটি আয়োজিত মহান স্বাধীনতা দিবসের আলোচনা ও ইফতার মাহফিলে বক্তারা বলেছেন, “হাজার বছরের শ্রেষ্ট বাঙ্গালী জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্ম না হলে বাংলাদেশ স্বাধীন হত না, আমরাও বিশ্ব দরবারে নিজেদের বাঙ্গালী হিসেবে পরিচয় দিতে পারতামনা। বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ একই সূত্রে গাঁথা।
২৩ মার্চ শনিবার পূর্ব লন্ডনে আয়োজিত অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, স্বাধীনতার ৫২ বছর পরও স্বাধীনতা বিরোধী অপশক্তি অপপ্রচারে লিপ্ত। এসব দেশবিরোধী অপপ্রচারের বিরুদ্ধে আমাদের সকলকে আবারও একাত্তরের মত ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।
পূর্ব লন্ডনের ১২ ক্যাভেল স্ট্রিটের একটি রেষ্টুরেন্টে আয়োজিত এই সভায় সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের সিনিয়র সহসভাপতি সাজিদুর রহমান। সংগঠনের সেক্রেটারী জোবায়ের আহমদের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় মূল বক্তা হিসেবে বক্তব্য রাখেন ব্রিটেনে বাংলা মিডিয়ার জ্যেষ্ট সাংবাদিক—গবেষক মতিয়ার চৌধুরী। মতিয়ার চৌধুরী বলেন, স্বাধীনতা বিরোধী অপশক্তি শহীদদের সংখ্যা, স্বাধীনতার ঘোষক ইত্যাদি নিয়ে অপপ্রচারে লিপ্ত। আমরা যারা মুক্তিযুদ্ধ প্রত্যক্ষ করেছি আমাদের দায়িত্ব নবপ্রজন্মের কাছে মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস তুলে ধরা।”
তিনি বলেন, “বঙ্গবন্ধু ৭ই মার্চের ভাষনে স্বাধীনতার ঘোষনা দেন— ‘এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম— এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম।’ এর পরদিন থেকে গ্রামে গঞ্জে মানুষ যুদ্ধের প্রস্তুতি নিতে শুরু করে। ২৫ মার্চ দিবাগত রাত তথা ২৬ মার্চ ১৯৭১ এর প্রথম প্রহরে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীনতা ঘোষনা করেন। এ ঘোষনাটি ইপিআর—এর নিকট পৌঁছানো হয় এবং তা ইপিআর বেতারের মাধ্যমে সারাদেশে প্রচার করা হয়। এছাড়া বঙ্গবন্ধুর ওয়্যারলেসের মাধ্যমে স্বাধীনতার ঘোষণাটি চট্টগ্রামে নোঙর করা একটি বিদেশী জাহাজের সেটেও ধরা পড়ে। শুনতে পান পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর জনসংযোগ শাখার প্রধান মেজর সিদ্দিক সালিকও। পরদিন অর্থাৎ ২৬ মার্চ দুপুরে এ বার্তাটিই কালুরঘাট বেতার থেকে সর্বপ্রথম পাঠ করেন চট্টগ্রাম জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এমএ হান্নান। তারপর বারবার ঘোষণাটি পড়ে শোনান অধ্যাপক আবুল কাশেম সন্দ্বীপ, ২৭ মার্চ মেজর জিয়াকে দিয়ে বঙ্গবন্ধুর পক্ষে স্বাধীনতার এ ঘোষণাটি পাঠ করানোর জন্য তাকে কালুরঘাট বেতার কেন্দ্রে নিয়ে আসেন তৎকালীন চট্টগ্রামের বেতার কর্মী বেলাল মোহাম্মদ, অধ্যাপক মমতাজ উদ্দিন আহম্মেদ ও অধ্যাপক আবুল কাশেম সন্দ্বীপ। ২৭ মার্চ বিকেলে কালুরঘাট বেতার থেকে মেজর জিয়া বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পক্ষে স্বাধীনতার ঘোষণাটি পাঠ করেন। জিয়া জীবিতাবস্থায় কোনদিনই দাবী করেননি যে তিনি স্বাধীনতার ঘোষক। ঘোষনা দেয়া আর পাঠ করা একই জিনিষ নয়।”
আলোচনায় আরো অংশ নেন সংগঠনের ফাউন্ডার প্রেসিডেন্ট অধ্যক্ষ মোহাম্মদ শাহেদ রহমান, সহসভাপতি জামাল আহমদ খান, এ্যাসিসটেন্ট সেক্রেটারী সালেহ আহমদ, এ্যাসিসেটেন্ট সেক্রেটারী ডক্টর আজিজুল আম্বিয়া, এ্যাসিসটেন্ট ট্রেজারার মির্জা আবুল কাশেম, ইভেন্ট এন্ড ফ্যাসেলিটিস সেক্রেটারী এ. রহমান অলি, সাবেক সহ সভাপতি ব্যারিষ্টার ইকবাল হোসেন, সাংবাদিক শাহ মোস্তাফিজুর রহমান বেলাল, ইমরান আহমেদ।
এ ছাড়া আলোচনায় আরো অংশ নেন কবি ফয়েজুর রহমান ফয়েজ, হাসান আহমেদ, মোঃ সুলতান আহমেদ, সালমান আহমেদ চৌধুরী, মোঃ সুয়েজ মিয়া, আব্দুস সত্তার, সেলিম আহমদ, শাহ সোহেল আমিন প্রমুখ।
জাতির জনক বঙ্গবন্ধু, ১৫ই আগষ্টের শহীদান, স্বাধীনতা যুদ্ধের ৩০ লক্ষ শহীদের আত্মার শান্তি এবং দেশ ও জাতির কল্যাণ কামনা করে মোনাজত করেন সংগঠনের টেজারার আশরাফুল হুদা।
Leave a Reply